গত ডিসেম্বর থেকেই পাকিস্তানের অর্থনৈতিক মন্দা শুরু হয়েছিল। এই মুহূর্তে মুদ্রাস্ফীতির কারণে সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে চলে গিয়েছে জিনিসপত্রের দাম। অবস্থা এতটাই কঠিন, নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস কিনতে মানুষের হিমশিম খাওয়ার মত অবস্থা। পাকিস্তানের বিখ্যাত পত্রিকা ‘দ্য ডন’ জানাচ্ছে এই মুহূর্তে লাহোরের বাজারে একটি ডিমের দাম তিরিশ টাকা। এক ডজন ডিম কিনতে হলে খরচ হবে সাড়ে তিনশো টাকা। আদার কিলো হাজার ছুঁয়েছে। পাকিস্তান সরকার মুখে অনেক প্রতিশ্রুতি দিলেও জিনিসের দাম নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যর্থ।
মানুষের আর্থিক অবস্থার উন্নতি করবেন বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন ইমরান খান। এখনও পর্যন্ত সেই প্রতিশ্রুতি রাখতে ব্যর্থ তিনি। কিছুদিন আগেই আকাশছোঁয়া হয়েছিল টমেটোর দাম। কয়েকদিন আগে ইমরান কথা দিয়েছিলেন চিনির দাম কমাবেন। কিন্তু কোথায় কী? প্রতিশ্রুতি সার। সাধারণ মানুষের পকেটের অবস্থা দিন দিন খারাপ হচ্ছে। পাকিস্তানে বর্তমানে ২৫ শতাংশের বেশি মানুষ দারিদ্র সীমার নীচে বাস করেন। এ সব মানুষের প্রায় সবারই খাদ্য তালিকায় ডিম থাকে, এখন সেটাও নাগালের বাইরে।
গত ডিসেম্বরে ৪০ কেজি গম কিনতে দু’হাজার টাকা খরচ করতে হয়েছে। চলতি বছরের অক্টোবরে এই রেকর্ড ভেঙেছে। বর্তমানে প্রতি কেজি গম বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকায় অর্থাৎ ৪০ কেজি গমের দাম ২৪০০ টাকা। অথচ সাধারণ মানুষের কষ্টের প্রতি সরকারের ভ্রুক্ষেপ নেই। পাকিস্তানি মিডিয়ায় ইমরান সরকার রোজ ভারতকে যুদ্ধের চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিচ্ছে। চিনের সঙ্গে মহড়া করছে। নিজের দেশের মানুষ এই দুর্দশায় দিন কাটাচ্ছে, তাতে থোড়াই কেয়ার। এদিকে পাকিস্তানের সবচেয়ে বড় বন্ধু চিন ইমরান সরকারের এখন চিন্তা বাড়িয়েছে।
তাঁরা পাকিস্তানকে ঋণ দেওয়ার আগে নিশ্চয়তা চেয়েছে। পাকিস্তানের খারাপ আর্থিক অবস্থার কারণে দেশটির মেইন লাইন-১ (এমএল -১) রেলপথ প্রকল্পের জন্য ৬ বিলিয়ন ডলারের ঋণ অনুমোদনের আগে অতিরিক্ত গ্যারান্টি চেয়েছে চিন। অন্যদিকে পাকিস্তান সস্তা সুদের হারে লোন আশা করছিল। যেহেতু পাকিস্তানের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি মজবুত না, তাই শুধুমাত্র পাকা গ্যারান্টির ভিত্তিতেই চিন লোন দেবে বলে জানিয়েছে। এতে মাথায় বজ্রাঘাত হওয়ার মত অবস্থা ইমরান খান সরকারের। পুরনো বন্ধু সৌদি আরব মুখ ঘুরিয়ে নিয়েছে আগেই। চিন আর্থিক বোঝা চাপালে অবস্থা আরও শোচনীয় হবে।
Leave a Reply