বগুড়া সদরের দশটিকা গ্রামে সরকারের গৃহ নির্মাণ প্রকল্পে সময় টিভির প্রতিনিধি মাজেদুর রহমান ও ক্যামেরাম্যান রবিউল ইসলাম লাঞ্ছিত হওয়ার ঘটনা দুঃখজনক ও বেদনাদায়ক বলে উল্লেখ করেছেন সদর উপজেলা চেয়ারম্যান এবং আওয়ামী লীগ সভাপতি আবু সুফিয়ান শফিক।
তিনি বলেছেন, বুধবার দুপুরে সাংবাদিকরা কাউকে না জানিয়ে নিশিন্দারা ইউনিয়নে নির্মাণাধীন ওই প্রকল্পে গিয়ে নিম্নমানের কাজের অভিযোগ করেন। এরপর তারা ভাংচুর করায় জনরোষের শিকার হয়েছেন। উপজেলা প্রশাসনের কেউ তাদের মারপিট করেননি।
বৃহস্পতিবার বিকালে সদর উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
এ ঘটনায় পুলিশ এজাহারভুক্ত ইউপি সদস্য লুৎফর রহমান লালমিয়াকে (৫৫) গ্রেফতার করেছে।
সদর উপজেলা চেয়ারম্যান এবং আওয়ামী লীগ সভাপতি আবু সুফিয়ান শফিক জানান, মুজিববর্ষ উপলক্ষে সদর উপজেলায় ২৫০টি বাড়ি নির্মাণ প্রকল্পের কাজ চলছে। বুধবার দুপুরে সময় টিভির প্রতিনিধি মাজেদুর রহমান ও ক্যামেরাম্যান রবিউল ইসলাম নিশিন্দারা ইউনিয়নের দশটিকা গ্রামের প্রকল্প এলাকায় যান। তারা কাজ নিম্নমানের হচ্ছে অভিযোগ করে দুটি পিলার ভেঙে ফেলেন। এ সময় স্থানীয় ওয়ার্ডের মেম্বার লুৎফর রহমান লালমিয়া তাদের ভাংচুর না করতে অনুরোধ করেন। পরবর্তীতে দুই সাংবাদিকের সঙ্গে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা দুঃখজনক ও বেদনাদায়ক। ওই সময় কে বা কারা আরও ১২০টি পিলার ভেঙে ফেলে।
তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রীর ‘ভিশন ২০২০-২১’ বাস্তবায়নে আমরা সদা সজাগ থেকে প্রকল্প বাস্তবায়নের চেষ্টা করি। তারপরও কেউ না কেউ উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড বাধাগ্রস্ত করার অপচেষ্টায় লিপ্ত। বুধবার সাংবাদিকদের ওপর হামলার ঘটনা তেমনি একটি অপচেষ্টা বলে মনে হয়। তিনি অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার জন্য আন্তরিক দুঃখ প্রকাশ করে সবাইকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এড়িয়ে চলার আহবান জানিয়েছেন।
সংবাদ সম্মেলনে সদর উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান এইচএম ইকবাল, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ডালিয়া নাসরিন রিক্তা, ইউপি চেয়ারম্যান কামরুল হুদা উজ্জ্বল, কামরুল হাসান ডালিম, আবু সালেহ নয়ন, রাসেল মামুন, মহররম আলী, মাফতুন আহম্মেদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে সময় টেলিভিশনের সাংবাদিক ও ক্যামেরাম্যানকে মারপিটের প্রতিবাদে বগুড়া টেলিভিশন রিপোর্টার্স ইউনিটি বৃহস্পতিবার সকালে শহরের সাতমাথায় মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে। তারা হামলাকারীদের ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছে।
সদর থানার ওসি হুমায়ুন কবির জানান, ওই ঘটনায় সময় টিভির সাংবাদিক মাজেদুর রহমান থানায় ইউপি সদস্য লাল মিয়া ও জনি নামে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। বৃহস্পতিবার বিকালে লাল মিয়াকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
ওসি আরও জানান, প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, সাংবাদিকরা গৃহনির্মাণ প্রকল্পে গিয়ে নিম্নমানের কাজের অভিযোগ তুলে দুটি পিলার ভাংচুর করেন। এরপর তারা মারপিটের শিকার হন।
Leave a Reply